আজ আবার মঞ্জরী টলোমলো পায়ে গাড়ি থেকে নেমে কোনরকমে নিজের ফ্ল্যাটের সামনে পৌঁছালো। আজ একটা নীল রঙের গাড়ি তাকে ছাড়তে এসেছিল। অনেক কষ্টে ব্যাগ থেকে চাবি বের করে লক্ খুলতেই গেছিল, ঠিক এমনসময়ই সমর ভিতর থেকে দরজাটা খুলে দিল।মঞ্জরীর অবস্থা দেখে রাগে লাল হয়ে গেল সমরের চোখমুখ। কিন্তু কিছু বলার আগেই দেখল, মঞ্জরী অজ্ঞানের মতো বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়েছে। পরের দিন প্রায় সকাল দশটা নাগাদ মঞ্জরীর ঘুম ভাঙল। মাথাটা যেন যন্ত্রণায় ছিঁড়ে যাচ্ছিল। ওকে উঠতে দেখেই সমর চেঁচিয়ে উঠল।
'অনেক সহ্য করেছি, আর নয়।কাল চাকরিতে ইস্তফা দাও আর এসে ঘর সামলাও'।
মঞ্জরী সোজাসুজি সমরের দিকে তাকিয়ে বলে, 'চাকরি তো আমি কিছুতেই ছাড়ব না '।
'মানে, তুমি কি বলতে চাইছো, তুমি কি ভাবো, এই দু'তিন দিন বাদে বাদেই তোমার এই নেশা করে বাড়ি ফেরার মানে আমি বুঝি না। এখন থেকে তুমি বাড়িতেই থাকবে, ব্যাস্'।
'নিজের কাজ হাসিল করার জন্য তুমি সবসময় আমাকে কাঠের পুতুলের মতো নাচিয়েছো সমর। কখনও লাল শাড়ি, কখনও নীল শাড়িতে আমাকে সাজিয়ে ডানে বাঁয়ে ঘুরিয়েছ।আমি সব বুঝতে পারতাম। তুমি ট্যুরে যাওয়ার সাথে সাথেই তোমার বস্ কেন বাড়িতে চলে আসত। কেন পার্টিতে আমাকে একা ছেড়ে দিয়ে কাজের বাহানায় গায়েব হয়ে যেতে, কি ভাবছ আমি বুঝতাম না। চিন্তা তো তোমার তখন করার কথা ছিল যখন তুমি আমায় সিড়ি বানিয়ে নিজের প্রোমোশন হাসিল করেছিলে। অনেক ব্যবহার করেছ আমাকে তুমি। আর নয়। এখন আমার রাস্তা আমি ঠিক করব। আমি একটা মানুষ, কাঠের পুতুল নই।
এই পর্যন্ত বলে মঞ্জরী উঠে দাঁড়ায় আর সমর যেন শূন্য ঘরের দেওয়াল গুলোতে রঙ বেরঙের ।
নানারকম কাঠের পুতুল দেখতে পায়।
Comments
Appreciate the author by telling what you feel about the post 💓
No comments yet.
Be the first to express what you feel 🥰.
Please Login or Create a free account to comment.